তরমুজের উপকারিতা

তরমুজের উপকারিতা

 তরমুজ একটি মৌসুমী ফল যা তার মন কাড়া রং এবং রসাল মিষ্টি স্বাদের জন্য সবার কাছে অত্যান্ত প্রিয়। এই গ্রীষ্মকালীন ফল শুধুমাত্র সুস্বাদুই নয়, এতে প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে। শরীরে জলের অভাব দূর করা থেকে শুরু করে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং হজমে সহায়তা সকল ক্ষেত্রেই এর অবদান আছে। আসুন তরমুজ খেলে কি হয় জেনে নি।

তরমুজ ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করে:

 তরমুজে ৯২% ই জল। এটি গরমের মাসগুলিতে হাইড্রেটেড থাকার জন্য একটি চমৎকার ফল। তরমুজের মতো জল-সমৃদ্ধ ফল ঘামের মাধ্যমে হারানো তরল পূরণ করে ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে সহায়তা করে। তরমুজ একটি সুস্বাদু এবং হাইড্রেটিং স্ন্যাক। এর প্রাকৃতিক মিষ্টতা এটিকে চিনিযুক্ত স্ন্যাকস ও ডেজার্টের একটি সন্তোষজনক বিকল্প করে তোলে।

তরমুজের উপকারিতা

তরমুজ ত্বকের উন্নতি করে:

 তরমুজ ভিটামিন A, B6 এবং C এ সমৃদ্ধ।  ভিটামিন সি কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায়ে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা এবং ত্বকে রক্ত ​​​​প্রবাহ উন্নত করে। ভিটামিন এ ত্বকের কোষ মেরামত করে ও শুষ্ক ত্বক প্রতিরোধ করে।  ভিটামিন বি 6 সিবাম উত্পাদন নিয়ন্ত্রণ করে ত্বকের তৈলাক্ততা হ্রাস করে এবং ব্রণ প্রতিরোধ করে।

তরমুজ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়:

 তরমুজে লাইকোপেন এবং সিট্রুলাইনের মতো যৌগ রয়েছে, যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। লাইকোপেন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোলেস্টেরলের মাত্রা ও প্রদাহ কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। সিট্রুলাইন শরীরে শরীরে নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদন বাড়ায়, যা রক্ত ​​​​প্রবাহ উন্নত করতে এবং রক্তনালীগুলিকে শিথিল করতে সাহায্য করে। তরমুজে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি আর উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তরমুজে যে পটাশিয়াম থাকে তা মানব দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

তরমুজ হজমে সাহায্য করে:

 তরমুজ ফাইবারের একটি ভালো উৎস। ফাইবার বাওয়েল মুভমেন্ট নিয়ন্ত্রণ করতে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং অন্ত্রে উপকারী  ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। উপরন্তু, তরমুজের উচ্চ জলীয় উপাদান মলকে নরম করে এবং মলত্যাগ সহজ করে পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

তরমুজ ক্যান্সারের প্রবণতা কমায়:

 তাজা তরমুজ লাইকোপেনের ভাল উৎস। এই ফ্লেভনয়েডটি শরীরের ক্ষতিকারক ফ্রি রাডিকেলগুলিকে প্রশমিত করতে সাহায্য করে। ফ্রি রাডিকেলগুলি কোষের ক্ষতি করে ক্যান্সারের বিকাশে অবদান রাখতে পারে। তরমুজ খাওয়ার ফলে পাকস্থলি, ফুসফুস, স্তন, প্রোস্টেট, জরায়ু ইত্যাদির ক্যান্সারের প্রবণতা কমে।

উপসংহার:

 তরমুজ একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল যার অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। সাধারণভাবে খাওয়া হোক, ফলের সালাদে যোগ করা হোক বা তরমুজের শরবতে তৈরি করা হোক, তরমুজ যে কোনো ভাবে খাওয়া যায়। ভারতের মতো গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশে, গ্রীষ্মকালে, তাপমাত্রা যখন অসহনীয় হয়ে ওঠে, তখন রসালো লাল তরমুজের একটি টুকরো শুধুমাত্র চোখকে প্রশান্তি দেয় না বরং তাপ মোকাবেলা করতে এবং শরীরের জলের মাত্রা পূরণ করতেও সাহায্য করে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url